আব্দুস সামাদ, সাতক্ষীরা : ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য মন স্থির করেছিলেন সাতক্ষীরার কলারোয়া হাইস্কুল এলাকার অমর আলীর মেয়ে আনোয়ারা (২৫)। সে অনুযায়ী স্থানীয় জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোয় যোগাযোগও করেছিলেন তিনি। সব কিছুই ঠিক ঠাক এগুচ্ছিল। কিন্তু দালালের খপ্পরে পড়ে যান পাসপোর্ট করতে গিয়ে। তারপর আর জনশক্তি অফিসে যাওয়া হয়নি।
আনোয়ারার কাছ থেকে অল্প কিছু টাকা নিয়ে তাকে তিন মাসের ভিসায় সৌদি আরবে বিক্রি করে দেয় দালালরা। সৌদি আরবে পা রাখার পরপরই তার উপর শুরু হয় নিপীড়ন। এভাবেই কেটেছে গত সাতটি মাস। আর মোবাইলে নিষ্ঠুর আচরণের কথা শুনে মেয়েকে কাছে ফিরে পেতে তার ছবি নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মা নাছিমা।
আনোয়ারার মা নাছিমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ও আর পারছে না বাপ, ওরা যা বলে তা না করলি, রাজি না হলি, ওরে খুব মারে। চার-পাঁচতলার উপর একটি ঘরে আনোয়ারারে রেখেছে। বাইরের লোকদের ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে বাড়ির লোকজন চলে যায়।’
‘প্রথম প্রথম ওর কাছে মোবাইল ছিল না। পরে ওরা একটা মোবাইল দেছে (+৯৬৬৫৩২১২৯৯৮৯)। তাতে টাকা থাকে না। আমরা কল দিলি কথা বলে। ও কোথায় থাকে তাও বলতে পারে না’, যোগ করেন তিনি।
কলারোয়া হাইস্কুল এলাকার অমর আলীর স্ত্রী নাছিমা আরো জানান, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুরের আব্দুর রহিম, তারালির সোনা শেখ, যশোরের ঝিকরগাছার আব্দুল গনি, সাতক্ষীরা শহরের ভিসা এজেন্ট সুভাষ চৌধুরী ও ঢাকার নুর ইসলাম নামে এক লোক আনোয়ারাকে সৌদি আরবে পাঠানোর নামে ওই দেশে বিক্রি করে দেয়।
তিনি জানান, এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু আজও পাচারকারীরা গ্রেফতার হয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে মেয়েকে অমানবিক নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন অসহায় মা নাছিমা।