নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলে সুপ্ত নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্র সপ্তাহখানেক ধরে নিখোঁজ রয়েছে।
তার মা গায়ত্রীরানি সুতারের (৫০) ধারণা, পারিবারিক কলহের কারণে তার স্বামীই ছেলেকে অপহরণ করেছে।
নিখোঁজের ঘটনায় সদর থানায় একটি ডায়েরি হলেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
সুপ্ত মজুমদার নড়াইল সরকারি বালক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। গায়ত্রীরানি বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড-এর (বিআরডিবি) একটি প্রজেক্টে নড়াইলে কর্মরত হওয়ার সুবাদে সুপ্ত ও অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া মেয়ে দীপাকে নিয়ে শহরের আলাদাতপুর এলাকায় ভাড়াবাড়িতে বসবাস করেন।
গায়ত্রী জানান, গত বুধবার (১৩ জানুয়ারি) ছেলে সারাদিন বাসায় ছিল। দুপুরের দিকে বাসা থেকে বের হয়। পরে আর ফেরেনি।
২০০৪ সালে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা গ্রামের মাখনলাল সুতারের মেয়ে গায়ত্রীর সাথে একই জেলা ও উপজেলার রুনশী গ্রামের মৃত মহারাজ মজুমদারের ছেলে দীপংকর মজুমদারের বিয়ে হয়।
গায়ত্রীর অভিযোগ, তাদের ঘরে সুপ্ত এবং দীপার জন্ম হওয়ার ছয় বছরের মাথায় স্বামী অন্য এক মহিলার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
প্রতিবাদ করলে স্বামী তার ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার শুরু করে। একপর্যায়ে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ টাকা না দেওয়ায় এবং বিভিন্ন সময় স্বামীর অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে তিনি তার নাবালিকা দুই সন্তানকে মাতৃস্নেহে লালন-পালনে নিজ হেফাজতে নিতে বরিশাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০০ ধারায় মামলা করেন এবং আদালতের রায়ের মাধ্যমে ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর নাবালক সন্তানদের নিজ হেফাজতে নেন। এর পরপরই পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের মাঠকর্মী হিসেবে নড়াইলে যোগদান করে এখানে অবস্থান করছেন। দুই সন্তান নড়াইলের দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে।
এদিকে, ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি গায়ত্রী তার এবং দুই সন্তানের খাওয়া, লেখাপড়া ও চিকিৎসার খরচ পেতে নড়াইল সদর পারিবারিক আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে একটি খোরপোষের মামলা করেন। মামলাটি বিচারাধীন। গায়ত্রীরানির সন্দেহ, স্বামী সুপ্তকে নিজ জিম্মায় নিতে তাকে অপহরণ করেছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী গায়ত্রীরানির দেওয়া স্বামীর পুরনো একটি মোবাইল নম্বরে ফোন করলে অপরপ্রাপ্ত থেকে 'রং নম্বর' বলা হয়।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই ইব্রাহীম খলিল বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা এবং ওই এলাকার কয়েকটি ফোন নম্বরে কথা বলেছি। তারা কেউ ওই ছেলেকে তার বাবার সাথে বা আশেপাশে কোথাও দেখা যায়নি।'